পিশাচ_সংসার।(4)

পিশাচ_সংসার।(4)

★পিশাচ_সংসার।
★লেখক-মাসুদ রানা।
           (৪র্থ পর্ব)
--------------------------------






আলী আমজাদ লাশটাকে দেখে ভয়ে আতকে উঠেন আর বলেন এটাতো কোন পিশাচের পৈশাচিক কাজ।

আলী আমজাদ পুলিশ জীবন আহমেদকে বলেন:
-এটা কোন সাধারন খুন না। বাচ্চা ছেলেটাকে কোন সাধারন মানুষ বা প্রানী হত্যা করেনি। কোন মানুষ খেকো পিশাচের ধারাই এই কাজ সম্ভব।

পুলিশ জীবন আহমেদ মোটেও পিশাচ বা অলৌকিক শক্তিতে বিশ্বাস করে না।
আর সে এই পিশাচের গল্পের জন্যই ডাক্তার আলী আমজাদকে এতোটা অপছন্দ করে। তাই জীবন অনেকটা রেগেই বলে ডাক্তারকে:
-স্যার!! আপনি আমার সাথে মজা করছেন? আমি আপনার পিশাচ বইয়ের গল্প শুনতে আসিনি! এইসব কথা অন্য কাউকে শুনাবেন। আপনি দয়া করে গল্পগুলো বাদ দিয়ে লাশটার শরীর পরীক্ষা করুন।
আর মৃত্যুর কারণটা বলুন।

ডাক্তার আলী আমজাদ আগেই বুঝতে পেরেছিলো তার কথা পুলিশ বিশ্বাস করবেনা। তবে এই হত্যা যে কোন সাধারণ প্রানীর কাজ না তা ডাক্তার আগে থেকেই ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিলো লাশটা দেখে। ডাক্তার আবার বললো:
-আমি তোমার সাথে মজা করছি না বা আমার পিশাচ গল্প পড়ে শুনাচ্ছি না। যাহ সত্যি তাই বলছি। এইরকম কর্মকান্ড কোন সাধারণ প্রাণীর হতে পারে না। তাও তোমার বিশ্বাসের জন্য ল্যাবে নিয়ে যাচ্ছি। আমি পরীক্ষা করে তুমাকে জানাচ্ছি। তুমি ততক্ষন চাইলে সেলফে রাখা আমার লেখা পিশাচের বইগুলো পড়তে পারো।
-নাহ। থাক! বই পড়লে আমার চোখ ব্যাথা করে। আমি পরে পড়বো সময় করে। এখন আপাতত আপনি তারাতারি বাচ্চাটার শরীর পরীক্ষা করুন।

এরপর ডাক্তার আলী আমজাদ কিছুটা মুচকী হাসি দিয়ে বাচ্চাটার লাশটা নিয়ে ল্যাবে প্রবেশ করলেন। আর ল্যাবের বাহিরে পুলিশ অফিসার জীবন আহমেদ অপেক্ষা করছিলো তদন্তে কি ফলাফল আসবে এটা জানার জন্য।

সে সেলফে আলী আমজাদের লেখা ৩ টা পিশাচের গল্পের বই দেখলো।
এই বইগুলো লেখার জন্যেই আলী আমজাদকে সবাই পাগল ডাক্তার বলেন। ডাক্তার আলী আমজাদ একজন অনেক বড় ডাক্তার। তিনি অ্যামেরিকায় জাওয়ার সুযোগও পেয়েছিলেন কিন্তু সে তার দেশকে ছেরে কোথাও যেতে চায়নি। আলী আমজাদ শহরেও বড় ক্লিনিক খুলতে পারতেন। তবে তার কাছে নাকি শহর থেকে দুরের এই গ্রাম্য এলাকাই বেশি ভালো লাগে। তিনি ছোটবেলা থেকেই অলৌকিক শক্তি , পিশাচ নিয়ে গবেষণা করে এসেছেন। বন্ধুরা তার কাছে আসলেই তিনি পিশাচের গল্প বলা শুরু করে দিতেন। তাই ভয়েই তার বন্ধুরা আর তার কাছে আসতোনা। তিনি একজন সফল ডাক্তার হওয়ার পরেও যখন পিশাচ নিয়ে গল্পের বই বের করেন তখন তাকে নিয়ে সবাই হাসাহাসি শুরু করেন। তার লেখা পিশাচের প্রথম বই এর মাত্র ৩ কপি বিক্রী হয়। এক কপি আজাদ সাহেবের মা কিনিছেন, আরেক কপি তার নিজের স্ত্রী কিনেছেন , আর ৩য় কপিটা জোড় করে এই পুলিশ জীবন আহমেদের কাছে বিক্রী করেছিলেন আজাদ। তখন জীবনকে জোড় করে তার লেখা প্রথম পিশাচ বইটা পুরোটা পড়িয়েছিলো আলী আমজাদ। বইটাতে এতোই ভয়ংকর আর জঘন্য কথা লেখা ছিলো যে জীবন টানা ৭ দিন কোন খাবার ভালোমতো খেতে পারেনি। এরপর থেকেই জীবন আহমেদ ডাক্তার আলী আমজাদের উপর এতো রেগে থাকেন। আলী আমজাদের ২য় এবং ৩য় বইটারো মাত্র ৪-৫ কপি বিক্রী হয়। তাও তার আপন মানুষেরাই
কপি গুলো কিনেছে। তাই হতাস হয়ে আলী আমজাদ পিশাচের গল্প লেখা বন্ধ করে দেয় এবং নিজের নামে একটা বই প্রকাশের প্রকাশনি খুলে ফেলেন। এরপর অনেক ভালোভালো লেখকেরা তার প্রকাশনিতে এসেছিলো তাদের লেখা বইগুলো প্রকাশ করার জন্য। তবে আলী আমজাদ তাদের অনেক ভালো লেখাগুলোকেও নেয়নি। তিনি বলেছেন যে আমজাদ প্রকাশনিতে এইসব ফালতু গল্প প্রকাশ হয় না। তোমরা পিশাচের গল্প লিখে এনে দাও। আমি বিনা খরচে তোমাদের বই প্রকাশ করে দিবো। তবে কোন লেখকই পিশাচ নিয়ে গল্প লেখতে রাজি হয়না। তারা ডাক্তার আলী আমজাদকে পাগল বলে চলে যায়। এরপর থেকে আলী আমজাদের মাথা থেকে পিশাচের গল্প লেখা এবং প্রকাশনির ভুত কিছুটা নামে।

তবে এইসকল কারণেই জীবন আহমেদও আলী আমজাদকে পাগল মনে করেন এবং তাকে এতো অপছন্দ করেন।

কিন্তু জীবন জানেন আলী আমজাদ একটু অন্য রকম হলেও তার মনটা অনেক পরিষ্কার। এর আগেও অনেকগুলো তদন্তে জীবনকে সহায়তা করেন তিনি। ডাক্তার আলী আমজাদের তদন্তে যে কোন ভুল থাকবে না তাও জীবন ভালোমতোই জানেন। তবে এই সব পিশাচের কথা শুনলেই জীবনের মাথা গরম হয়ে যায়। কারন সে জানে যে পিশাচ শুধু রুপকথায় হয়। বাস্তবে এর কোন অস্তিত্ব নেই।আলী আমজাদের কথা ভাবতে ভাবতেই জীবনের অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়ে যায়। ডাক্তার আলী আমজাদ জীবনকে ল্যাবের ভেতরে আসতে বলেন। এরপর আলী আমজাদ জীবনকে বলেন:
-জীবন। হয়তো তুমি আমার কথা কিছুতেই বিশ্বাস করবে না। তবে যা সত্য তাই শুনো। তোমার মতে এইরকম হিংস্র ভাবে বাচ্চাটাকে কোন জঙ্গলি পশু হত্যা করেছে। কিন্তু তুমি যে জায়গার কথা বললে , যেখান থেকে লাশটা পাওয়া গেছে তার আশেপাশের ২০ কিলোমিটারের ভেতর কোন শিয়ালই দেখা যায় না আর হ্রিংস প্রানীতো দুরের কথা। আর বাচ্চাটার গলায় ছুরির দাগ পাওয়া গেছে। তার মানে কোন পশু না । মানুষই তাকে হত্যা করেছে। আবার বাচ্চাটার পুরো শরীর রক্তশুন্য ছিলো। কিছু একটা তার শরীর চুষে সব রক্ত খেয়ে নিয়েছে। যা কোন পশুর পক্ষে করা সম্ভব না। এছাড়া ছেলেটার শরীরের অনেক জায়গাতেই মানুষের মুখের আর নোখের দাগ রয়েছে। এইসব কিছু কোন পশু বা সাধারণ মানুষের কাজ না। আমি নিশ্চিত কোন মানুষ খেকো পিশাচের কাজ এটি।

আলী আমজাদের মুখে আবার পিশাচ শব্দটি শুনে পুলিশ জীবন আহমেদের আবার রাগ উঠে। সে রেগে ল্যাব থেকে বের হয়ে যায়। আর ভাবতে থাকে পিশাচরা আবার কিভাবে মানুষকে হত্যা করে খায়। তবে এবার ডাক্তার আলী আমজাদের উপর রাগ করাও ঠিক হবে না কারন তার প্রত্যেকটা কথার মধ্যে যথাযথ যুক্তি ছিলো। তিনি যুক্তি ছারা একটা কথাও বলেনি।
জীবন মাথাটা একটু ঠান্ডা করলো। তবুও সে পিশাচে বিশ্বাস করেনা। তারমতে হয়তো কোন সাইকো মানুষেরাই এই কাজটা করেছে। ঐ বাচ্চা মেয়েটা বলেছিলো যে একটা পুরুষ আর মহিলা বাচ্চা ছেলেটাকে ছিরে খাচ্ছিলো। তাহলে হয়তো তারাই এই সাইকো। কিন্তু একজন মানুষ কিভাবে তাজা রক্ত আর কাঁচা মাংস হজম করতে পারে এটা সে কিছুতেই বুঝতে পারলোনা।

বুঝলো আলী আমজাদের কথাই মেনে নিতে হবে। কারন এছাড়া আর কেউ তাকে এই তদন্তে সহায়তা করতে পারবে না। তাই তিনি নম্রভাবে আলী আমজাদের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করলেন:
-স্যার? তাহলে কি
সত্যিই এটা নরখাদক কোন পিশাচের কাজ?
-আমার যতটুকু বোঝানোর তোমাকে বুঝিয়েছি। বিশ্বাস অবিশ্বাস তোমার ব্যাপার।
-তবে স্যার আমি যদি এই পিশাচের কথাটা আমার উপরের স্যারকে বলি তাহলে আমাকে পাগল বলে ১ মিনিটের মধ্যে সাসপেন্ড করে দিবে। আমাকে কেসটা শেষ করার জন্য দয়া করে সাহায্য করেন।
-হুম। এর জন্য তোমাকে প্রথমে তাদের খুজে বের করতে হবে যারা এই বাচ্চাটাকে মেরেছে। আচ্ছা তুমি কি কোন সুত্রই পাওনি? কে প্রথম ঝোপে বাচ্চাটাকে দেখেছে?
-স্যার একটা বাচ্চা মেয়ে দেখেছে। আর সে বললো সে নাকি একটা পুরুষ আর মহিলাকে বাচ্চাটাকে ছিরে খেতে দেখেছে। তবে আমি এটা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারিনি।
-তুমি এইকথা আমাকে আগে বলোনি কেনো? তাহলেতো দুইয়ে দুইয়ে চারই হয়ে গেলো। এটা নিঃসন্দেহে একটা পৈশাচিক কাজ। তুমি তাহলে প্রথমে সেই বাচ্চাটার কাছে যাও এবং তার কাছ থেকে সেই মানুষ খেকো পুরুষ আর মহিলার চেহারার বর্ণনা জেনে আসো। তারপর গ্রামের মানুষের কাছে খোজ নাও এদের চিনে কিনা। এছাড়া ঝোপের পাশে কি কোন জঙ্গল ছিলো?
-হ্যাঁ। ঝোপের বিপরীতেই ছিলো একটা বড় জঙ্গল।
-তাহলে এরপর জঙ্গলের ভেতরে পুলিশ দল নিয়ে যেও। বেশির ভাগ সম্ভাবনা রয়েছে এর ভেতরেই তারা এখনো লুকিয়ে রয়েছে।
কারন যখন বাচ্চাটা মেলার সবাইকে ডাকলো তখন তারা ভয়ে হয়তো জঙ্গলের ভেতরেই যাবে। অন্য কোথাও গেলে ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকতো।


এরপর জীবন ডাক্তার আলী আমজাদের কাছ থেকে বিদায় নিলো। এরপর সেই বাচ্চা মেয়েটার কাছে গেলো যে প্রথম ঝোপে লাশটা দেখেছিলো। মেয়েটার কাছ থেকে সেই পুরুষ আর মহিলার চেহারার বর্ণনা নেয় এবং পুরো গ্রামের সবার কাছে খোজ নেয় এমন কাউকে কখনো বা মেলার দিন দেখেছিলো কিনা! তবে এই বর্ণনায়কেউই তাদের চিন্তে পারলোনা।

জীবন ভাবলো হয়তো মানুষখেকো লোকগুলো অন্য কোন গ্রাম থেকে এসেছে বা শহর থেকে এসেছিলো। তবে তাদের মধ্যে যে একটা বড় রহস্য লুকিয়ে রয়েছে তা সে ভালোভাবেই আন্দাজ করতে পেরেছিলো।

এরপর আর কোন উপায় না দেখে জীবন আলী আমজাদ কে ফোন করে এবং বলে যে তাদের আর কোন উপায় নেই। শেষ চেষ্টা করার জন্য একবার তাদের জঙ্গলের ভেতরেই যেতে হবে। বাচ্চাটার হত্যাকারী হয়তো এর ভেতরেই এখনো লুকিয়ে রয়েছে। আলী আমজাদও তার সাথে সহমত করলেন। এরপর ডাক্তার আলী আমজাদ, পুলিশ জীবন আহমেদ এবং আরো দুজন হাবিলদার মিলে তাদের পুলিশ গাড়িতে করে জঙ্গলের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
তাদের অনেক ভেতরে যেতে হবে।

অন্যদিকে জঙ্গলের অনেক ভেতরে শামীম আর জাহানারা মুখ কালো করে ভয়ে ভয়ে বসে আছে। তারা জানে এতক্ষনে হয়তো সবাই তাদের কথা জেনে গেছে। হয়তো বাচ্চাটার লাশ পেয়ে পুলিশো তাদের খুচ্ছে। তাই এখন এই জঙ্গল থেকে বের হলেই বিপদ ঘটবে। জাহানারা শামীমকে বললো:
-শামীম এখন আমরা কি করবো?
-জানি নাহ আমি। আমার মাথায় কিছুই আসছে না। হয়তো আমরা ধরা পরে যাবো। আর ধরা পরলেই নিশ্চিত মৃত্যু।
-কিন্তু আমার যে রক্ত তৃষ্ণা পেয়েছে শামীম। রক্ত ছারা আমি আর এক মিনিটো বাঁচতে পারবো না। আমাকে রক্ত তৃষ্ণা মেটাতেই হবে।
-আমারো যে তাজা মাংসের ক্ষুধা লেগেছে। কিন্তু এখন জঙ্গলের এতো গভীরে কিভাবে মানুষ পাবো।

এরপর শামীম আর জাহানারা দুজনেই মন খারাপ করে বসেছিলো। হঠাৎ জাহানারা এর রক্ত তৃষ্ণা আরো বেড়ে গেলো। "পিশাচ সংসার" বই এর অভিশাপ অনুসারে। পিশাচেরা রক্ত আর মাংস না পেলে পাগলের মতো হয়ে যাবে এবং এক পর্যায়ে পিশাচ দম্পতি একে অপরকে খুন করে তাদের মাংস আর রক্ত খাবে এবং শেষে তারা নিজেদের মাংস নিজেরাই ছিরে খাবে এবং মারা যাবে।

জাহানারা তৃষ্ণার্থ দৃষ্টিতে তার স্বামী শামীমের দিকেই তাকায়। শামীম অবাক হয়ে প্রশ্ন করে:
-কি হয়েছে জাহানারা?
-পারলে আমায় ক্ষমা করে দিও শামীম।
-ক্ষমা! কী বলছো এসব তুমি?! মানে কী?

এরপর শামীম কিছু বুঝতে পারার আগেই জাহানারা ছুরিটা বের করে সোজা শামীমের গলায় চালিয়ে দেয়।

শামীম স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি যে জাহানারা তার সাথে এমন কিছু করতে পারে। শামীম সাথে সাথেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। চারিদিকে রক্ত ছিটিয়ে পরে। জাহানারার ও কিছু করার ছিলো না। সে রক্ত তৃষ্ণায় পাগল হয়ে গিয়েছিলো। জাহানারা শামীমের পুরো শরীর ছিরে ছিরে রক্ত চুষে খেতে লাগলো। কিছুক্ষণ পরেই শামীমের পুরো শরীর রক্তশুন্য করে ফেললো। । এরপর জাহানারার রক্ত তৃষ্ণা মিটে যায় ।

জাহানারা এর রক্ত তৃষ্ণা মিটার পর সে বুঝতে পারে যে সে রক্ত নেশায় উত্তেজিত হয়ে তার স্বামী শামীমকেই খুন করে ফেলেছে। যতক্ষণে বুঝেছে ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে।

এরপর শামীমের কষ্টে জাহানারা চিৎকার করে কাঁদতে থাকে।

অন্যদিকে পুলিশের গাড়িও তাদের খুঁজতে খুঁজতে জঙ্গলের অনেক ভেতরে প্রায় জাহানারা এর অনেক কাছে পৌছে গিয়েছিলো।

গাড়ি থেকে জীবন আহমেদ ও ডাক্তার আলী আমজাদ কিছুটা দুরে একটা মহিলা কন্ঠের কান্না শুনে গাড়িটা থামিয়ে দেয়। অন্য দিকে জাহানারাও একটা গাড়ি আসার শব্দ শুনে কান্না থামিয়ে দেয়।


. . . . . Continue . . . . .

No comments

এক চিলতে রোদ্দুর।

খুব সাবধানে পায়ের আওয়াজ বাঁচিয়ে বাথরুমে ঢুকে পড়লো সুচেতনা। পবিত্র ওপাশ ফিরে এখনও ঘুমাচ্ছে। বাথরুমের লাইট জ্বেলেই দুফোঁটা ইউরিন ফেললো প্...

Powered by Blogger.