পাগলামি ছোঁয়াচে রোগ যে


দীপিকা পাডুকোন আমার সারা গালে চুমু দিয়ে লিপিস্টিক মেখে দিয়েছে! দীপিকাকে বার বার বললাম লিপিস্টিক মুছে এসে চুমু দিতে ও আমার কথা শুনছিলই না! মা দেখলে কাউয়্যার পচা ডিম মারবে এই হুমকিও দিয়েছিলাম, কে শোনে কার কথা! হিন্দিতে কী কী যেন বলছিল কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। শুধু আমার গাল টেনে টেন বলছিল ইটস সো সফট বলেই আমার চুমু খাচ্ছিল! এই একটা কথা ইংরেজিতে বলেছিল বলে বুঝেছিলাম। দীপিকা আমার গলাটা ছাড়োনা, একটু হিসু করে আসি বলাতে সে রাগ করে বাইরে চলে গেল! এই মেয়ে মানুষ আজব কিসিমের, এদের কাছে হিসু বেগের চেয়ে রোমান্সের বেগ অতীব জরুরি। ওয়াশ রুমে যাচ্ছি.....
স্বপ্ন দেখছিলাম এতক্ষন!! উফফফ স্বপ্নটা এত দ্রুত ভেঙে গেল! অন্তর হারামজাদা ওর পা আমার বুকের উপর তুলে দেয়াতে ঘুম ভেঙে গেছে। এই বুকের উপর ই দীপিকা পাডুকোন শুয়ে ছিল আর এখানেই হারামী পা দেয়!! পা টা ভেঙে দিতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু জ্বর বাধিয়েছে বেচারা তাই কিছু বললাম না।
ফ্লোরে পাড়া দেবার জায়গা নেই, একজন লুঙ্গী পরে চ্যাগাইয়া শুয়ে আছে। বাতাসে লুঙ্গী আকাশগামী, সব কিছু দেখা যায়! নাউজুবিল্লা! পা দিয়ে লুঙ্গী ঠিক করে দিলাম। আর কয়েকটা মরার মত ঘুমায়। অথচ রাত সবে মাত্র বারোটা বত্রিশ। এই বাসায় এসেছি দুইদিন হল। পাশেই মহিলা হোস্টেল! আমাদের ছাদে উঠলেই কয়েকটা মেয়ের জানালা দিয়ে তাদেরকে দেখা যায়। সারাক্ষণ ই ওরা হই হুল্লোড় করে। আমাদের চেয়ে বেশী বজ্জাত ওগুলো।
আমাদের ভিতর শিডিউল ভাগ করে দেয়া আছে কে কোনটাইমে জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়াবো।
সকাল ১০-১১ টা - বাক্কার
সকাল ১১-১২ টা - অন্তর
বিকেল ৩-৪ টা - রাজু
বিকেল ৪-৫ টা - আমি
এই রুটিন এর একচুল তারতম্যও হতে দেইনা আমরা। ছাদে যাবার আগে আমরা নতুন শার্ট পরে যায়। পারফিউম এর গুষ্ঠি উদ্ধার করে দিই যে যেমন পারি। কে কার চেয়ে বেশি পার্ট নিয়ে যেতে পারি এই কম্পিটিশন চলে আমাদের মাঝে। এতটাই ঘোরে থাকি যে বুয়ার রান্না করা পানির ডাল আমাদের কাছে ঐ মেয়েদের চাহনীর মতই মায়াবী লাগে, ধুর ডাল কখনো মায়াবী হয় নাকি! এই বলেই এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে নিয়ে গালি দিতে ভুলে না আবার।
বাক্কার এক সানগ্লাস কিনে নিয়ে এসেছে, এতে নাকি ভাব বাড়ে। ঐদিকে আমি ব্যস্ত কী করে মেয়েটার ফোন নম্বর নেয়া যায়। বহুত ট্রাই করেছি কিন্তু মেয়েগুলো নিচেই নামেনা, জানালার দিকে তাকালেই খালি হাসে। জানালার গ্লাস আটকানো থাকে সবসময় ওদের, তাই কী বলে হাসে যে বোঝা যায়না। অন্তর তো এক মেয়ের খোলা চুল দেখে সাড়ে তিনশ লাইনের কবিত লিখে ফেলেছে!! রাজু একটু পর পর অন্তরকে বলে দোস্ত তোর চুলের কবিটতাকে ইন্ডিয়ানরা কী বলে সম্বোধন করবে রে? এই বলার সাথেই ঘরের ফ্লোর রেসলিং খেলার বক্স হয়ে যায়।
রাজু এক সাদা গেঞ্জি কিনে এনেছে, গেঞ্জির সামনে কালো মার্কার দিয়ে তার ফোন নম্বর লিখে দিয়েছে। রাজুর বুদ্ধি দেখে বাক্কার আর অন্তরও গেছে গেঞ্জি কিনতে। আমার কাছে টাকা না থাকায় চুপচাপ বসে ওদের কান্ড দেখতে লাগলাম। না ওদের কারো ফোনেই ফোন আসেনি অথচ ওরা ইশারা দিয়ে বুঝিয়ে এসেছে এটা ওদের ফোন নম্বর।
পরদিন সকাল গেল, বিকাল গেল, সন্ধ্যা হল কিন্তু ঐ মেয়েগুলো তাদের রুমেই নেই! একসাথে তিনটে মেয়ে উধাও! তিনদিন হল কিন্তু ওদের কোন খবর ই নেই। রাজু নিচ থেকে এসে এক নাগাড়ে হেসে যাচ্ছে, কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে আরো জোরে জোরে হাসছে! অনেক্ষন পর হাসি থামিয়ে বলল-
ঐ বাড়ির মালিক একটা মেন্টাল হাসপাতাল চালায়, সেখান থেকে কয়েকটা রোগী এনে রেখেছিল তার এই বিল্ডিং এ। উন্নত চিকিৎসার জন্যই এখানে ছিল এতদিন। প্রায় নাকি রোগী এনে রেখে চিকিৎসা চালায় এখানে।
এবার আমরা হাসি শুরু করলাম কেননা পাগলামি ছোঁয়াচে রোগ যে!

No comments

এক চিলতে রোদ্দুর।

খুব সাবধানে পায়ের আওয়াজ বাঁচিয়ে বাথরুমে ঢুকে পড়লো সুচেতনা। পবিত্র ওপাশ ফিরে এখনও ঘুমাচ্ছে। বাথরুমের লাইট জ্বেলেই দুফোঁটা ইউরিন ফেললো প্...

Powered by Blogger.