নারী=ন্যাকামি।(স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায়)


একটা জিনিস খেয়াল করলাম। জগতের দৃষ্টিতে মেয়েদের সুন্দরী হওয়ার পাশাপাশি হতে হয় ন্যাকা। আপনি এখন বলবেন, ‘মেয়েদের সুন্দরী হতে হয় একথা আপনাকে কে বললো। কালো মেয়ে মায়াবতী’ এই কথার উত্তরে আমি খালি একটা কথাই বলবো, আপনি দয়া করে গার্লস গ্রুপে যান। ওখানে গেলেই দেখতে পাবেন ডেইলি যদি একশো পোস্ট হয় তার মধ্যে ৬০% পোস্ট হয় স্কিন ব্রাইট করার ফর্মুলা চেয়ে। কেনো জানেন? কারন,মায়াবতী আপনি কেবল খাতাতে লিখেন,কিংবা কিবোর্ডেই টাইপ করেন। আজ যদি আপনি এটা মন থেকেই মানতেন তবে নিশ্চই ফেয়ার এন্ড লাভলীর অ্যাড বের হতো না!!
:
যা বলছিলাম, মেয়েদের কিন্ত অসম্ভব ন্যাকা হতে হয়। একটা মেয়ে যখন গাল নাক লাল করার জন্য চামড়ায় সাদা গোলাপি ওয়াটারপ্রুফ মেকাপ করবে আর অল্পতেই কেঁদে দেয়ার পর তার গাল আরো লাল হয়ে যাবে, আপনার কাছে সেটাই আকর্ষনীয় ঠেকবে। পান থেকে চুন খসলে কেঁদে দেয়া মেয়েটিকে আপনি কিউট, সুইট বলে উপাধি দ্যান। তাই কিছু মেয়েদের কান্না না পেলেও ন্যাকামি করে কাঁদতে হয়। আমি কিছু মেয়ে দেখেছি। তারা মুখটা গোল গোল করে কথা উচ্চারন করে। তাদের বাংলা উচ্চারনের ভেতর কেমন যেনো একটা ইংলিশ ইংলিশ টান থাকে। শুনলে মনে হয় , এরা ভুল করে বাঙ্গালি ঘরে জন্ম নিয়েছে কিংবা জন্ম থেকেই ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে। অথচ বাসায় গেলে এদের ৯০ ভাগই আঞ্চলিক নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। আমি বলছিনা, বাহিরেও আঞ্চলিকতা দেখাও। আমি বলছি, তোমার বাংলা উচ্চারনটাকেও কেনো তুমি ওলে ওলে করে উচ্চারন করো? কেনো করে জানেন? কারন এদের আপনারা মর্ডান বলেন।
মেয়েরা মুখে আটা ময়দা সুজি খিচুড়ি সব মাখে(আপনাদের ভাষ্যমতে)। খুব কম মেয়েই পাবেন যারা বাহিরে যাওয়ার সময় ন্যাচারাল লুকে বের হয়। অধিকাংশ মেয়েরাই বাহিরে গেলে নরমাল ক্রিমও দেয় না। তারা দেয় ফাউন্ডেশন টাইপ ক্রিম অথবা ওয়াটারপ্রুফ মেকাপ। যাতে ঘামলেও তাদের মুখটা চকচক করে। কেনো দেয় জানেন? কারন আপনারা কালো চামড়া দেখে নাক ছিটকান। মুখের দাগ দেখে ভ্রু কুচকান।
:
আমি একটা মেয়েকে দেখেছি। ওর গালি বলতে খালি ছিলো শালা(ছেলেদের সাথে)মেয়েটা কথায় কথায় গাল ফুলিয়ে বসে থাকতো।রিনরিনে গলায় কথা বলতো। কিন্ত জটিলতার কোনো কমতি ছিলো না তার মধ্যে। সোজা বাংলায় যাকে বলা হয় প্যাঁচ। কিন্ত সে ঠিকই তার ছেলে বন্ধুকে জিজ্ঞেস করতো, আচ্ছা শালা কি কোনো গালি? এটার অর্থ কি? আপনি যদি বলেন, মেয়েটা ইনোসেন্ট, তবে আমি বলবো আপনি একটা বলদ। মেয়েরা জটিল গালির অর্থ না জানতে পারে, কিন্ত বেয়াদব , হালারপো, এই টাইপের গালিগালাজের অর্থ জানবে না এটা যদি আপনি বিশ্বাস করতে পারেন, তবে আপনার এটাও বিশ্বাস করতে হবে ওই মেয়ে হয় এলিয়েন নয়তো নবজাতক শিশু।
:
আপনি খেয়াল করেছেন কিনা জানিনা, আপনার বান্ধবিটা,যখন আপনাকে গালি দেয়, তখন বলে তুই একটা ছাগল, একটা পাঠা তুই, তুই একটা ষাড়, একটা বাঁদর, তুই এত্তগুলা পঁচা।
আরে ভাই দাড়ান। রাগের সময় কেউ আপনাকে এসব বললে আপনার তো ওখানেই হাসতে হাসতে ল্যাটাইয়া পরার কথা। আর সবচাইতে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার কি জানেন? মেয়েরা খালি ছেলেদের গালি দেয়ার সময় এমন উদ্ভট স্টাইল ইউজ করে। যদি বিশ্বাস না হয়, আপনি কোনো একটা মেয়েকে খারাপ একটা গালি দিন,যদি সে রেগে মেগে আপনাকে ব্লক মারে তাহলে বুঝবেন সে এটার মিনিং জানে। আর যদি উল্টো অর্থ জিজ্ঞেস করে তবে বুঝবেন বালিকা আজো নবজাতক। আর নাহলে আপনার বান্ধবীর চ্যাট গ্রুপে যান। গিয়ে দেখুন সে তার মেয়ে বন্ধুদের সাথে কি ভাষা ব্যাবহার করে। আমার কথার সত্যতা সেখানেই পাবেন।
:
তাহলে,অধিকাংশ মেয়েরা এই ন্যাকামিটা ক্যানো করে? কারন, এই ন্যাকামিটা না করলে মানুষ বলবে, ছি!! তুমি মেয়ে হয়ে এসব বলো? তুমি মেয়ে হয়ে গালি দেও!!! ক্যান ভাই? বাংলাদেশের সংবিধানে কি মেয়েদের,গালিগালাজ নিষিদ্ধ? আচ্ছা,গালি দেওয়া কি খারাপ? হ্যা, অবশ্যই খারাপ। কিন্ত কুকুড়ের জন্য মুগুর লাগে, এটা ভুলে যাওয়া আরো খারাপ। কাউকে শিক্ষা দিতে যদি গালি দেয়াটা জরুরি হয় আর সেখানে যদি আপনি ‘তুমি একটা শিম্পাঞ্জি’ টাইপ গালি দ্যান ব্যাপারটা একটা জোক্স হয়ে গেলো না?
আমি বলছিনা গালিগালাজ করা খুব ভালো জিনিস। কিংবা আমি গালিগালাজ করতে কাউকে উৎসাহিতও করছিনা। আমি কেবল এক্সট্রা ন্যাকামিগুলোকে পয়েন্ট আউট করছি।
:
খুব খেয়াল করে দেখলে ,ওলে আমার বাবুতা, আমার সোনাতা, আমার ময়নাতা এই রকম ‘আতা’ টাইপ শব্দ মেয়েরাই বেশি ইউজ করে। ক্যানো জানেন? নাহলে তার প্রেমিক বলবে তুমি এমন ক্যানো? একটুও রোমান্টিক না কিংবা তুমি ভালোবাসতেই জানো না। আফসোস!!! এসব মিথ্যা মোহের জন্যও মেয়েদের ভং ধরতে হয় করতে হয় ন্যাকামি।
:
পৃথিবীতে খুব কম মেয়েই আছে যারা ন্যাচারাল। এ ধরনের মেয়েটা সত্য বলতে জানে। এদের কাছে আপনি বাবু সোনা কলিজা-গিলা-পিত্ত টাইপ শব্দ পাবেন না। এরা অপরাধীকে যেমন আচ্ছামতো তুলাধুনা করতে পারে তেমনি ভালোবাসাকে কাছে টেনে আগলেও রাখতে পারে। আর আরেকটু খেয়াল করলে দেখবেন এদের সঙ্গি সেসব পুরুষ, যারা সত্যিকার অর্থেই ভালোবাসার মর্ম বোঝে। এ জাতীয় পুরুষ তার অর্ধাঙ্গিনির মুখে উজ্জলতা না বরং স্নিগ্ধতাকে দেখতে পায়। এরা নিজেরাও যেমন সত্য বলতে পিছপা হয় না, তেমনি সত্য শুনতেও প্রস্তুত থাকে। আপনি যখন কোনো নারীকে সবসময় ন্যাচারাল ভাবেই দেখবেন, তখন একটু খোঁজ নিলে জানতে পারবেন তার স্বামী কিংবা ভালবাসার মানুষটা তাকে অমনভাবে দেখলেই সবচাইতে খুশি হয়। যে মেয়ে ন্যাকামি করবে না, জেনে রাখবেন তার জীবনসঙ্গিও তারই মতন ন্যাকামি পছন্দ করে না। তবে এমন কাপল হাজারে হয়তো এক জোড়া। তাই মেয়েদের ন্যাকামিটা করতেই হয়, স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায়।

No comments

এক চিলতে রোদ্দুর।

খুব সাবধানে পায়ের আওয়াজ বাঁচিয়ে বাথরুমে ঢুকে পড়লো সুচেতনা। পবিত্র ওপাশ ফিরে এখনও ঘুমাচ্ছে। বাথরুমের লাইট জ্বেলেই দুফোঁটা ইউরিন ফেললো প্...

Powered by Blogger.